এই দলটা পেলেই তাঁর রক্তে যেন নাচন ওঠে!

মোস্তাফিজুর রহমান মাত্রই ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে নেমেছেন, যাবেন নেটে বোলিং করতে। ‘আরররে কাটটার মাস্টার!’—ফিজকে দেখা মাত্রই একটু বিচিত্র উচ্চারণে ডাকতে শুরু করলেন মুশফিকুর রহিম! শুধু ফিজের সঙ্গেই নয়, পুরো অনুশীলন সেশনে সবার সঙ্গেই মজা-রসিকতা করলেন মুশফিক। এমনকি মাঠে আসা আম্পায়ার আলিম দারের সঙ্গেও!

প্যাড-গার্ড-গ্লাভস পরে যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন নেটে ব্যাটিং করতে, এক সাংবাদিক অনুরোধ করলেন ছবির জন্য পোজ দিতে। মুখে মিষ্টি একটা হাসি ছড়িয়ে মুশফিকের রসিকতা, ‘আর কত ছবি তুলবেন, আর কত?’ এ প্রশ্নের কি আর উত্তর আছে! দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান, তাঁর ছবি তো নিয়মিত তুলতেই হবে আলোকচিত্রীদের। ছবি তোলা বলে নয়, মুশফিকের মুখে এই যে হাসি, অনুশীলনে ফুরফুরে মেজাজে থাকা—এটাই তো বাংলাদেশ দলের দরকার।

এ বিশ্বকাপে খুব যে খারাপ খেলছেন, তা নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মুশফিকের ৭৮ রান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল দলের জয়ে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছেন ৪৪ রান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ করেছেন, তবে সেটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বড় দুটি ভুল করেছেন। নিজে রানআউট হয়েছেন। আবার কেন উইলিয়ামসনের রানআউট হাতছাড়া করেছেন। রানআউট হাতছাড়া করার বড় মাশুলই দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এ কারণে ভীষণ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মুশফিককে।

সমালোচনা বলেই নয়, চারিত্রিকভাবে ভীষণ আবেগি মুশফিক ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন ওই ম্যাচের পর। আজ তাঁর মুখে হাসি বলে দিচ্ছে, স্বাভাবিক হয়ে উঠেছেন, পেছনে ফেলেছেন নিউজিল্যান্ড ম্যাচ। এবং সেটি করা তাঁর জরুরিও। এবার যে প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। এই দলটা পেলেই তাঁর রক্তে যেন নাচন ওঠে! গত বছর নিদাহাস ট্রফিতে অপরাজিত ৭২ রানের এক ইনিংস খেলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তাঁর সেই নাগিন নৃত্য তো ক্রিকেট বিশ্বে ভীষণ আলোড়নই তুলল! দুবাইয়ে গত এশিয়া কাপে পাঁজরে তীব্র ব্যথা নিয়ে ১৪৪ রানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করলেন।

শ্রীলঙ্কাকে পেলেই তাঁর হারাতে ভীষণ ইচ্ছে করে, গত অক্টোবরে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেটি অকপটেই বলেছিলেন মুশফিক, ‘টেস্টে ওরা একটা সময় আমাকে অনেক ভুগিয়েছে। কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে ও দিলশান আমাদের অনেক ভুগিয়েছে। সাঙ্গাকারা আমাদের বিপক্ষে দুই-তিনটা ডাবল সেঞ্চুরি করেছে। একটা ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছে। আর সেই ব্যাটিং আমাকে দেখতে হয়েছে উইকেটকিপার হিসেবে! সেদিক দিয়ে একটা রাগ তো ছিলই। যদি সুযোগ পাই ওদের হারাব বা এমনভাবে ভোগাব, ফিরিয়ে দেওয়া আর কী!’

কাল আরেকটা ফিরিয়ে দেওয়ার ম্যাচ। বাংলাদেশ বিশ্বকাপে যে কখনো হারাতে পারেনি শ্রীলঙ্কাকে। ফিরিয়ে দেওয়ার ম্যাচে মুশফিক নিশ্চয়ই এগিয়ে আসতে চাইবেন সবার আগে ।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর