আশুলিয়ায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান

ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বিভিন্ন বাসা বাড়িতে নেয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) সকাল থেকে সাভারের তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (জোবিঅ) আশুলিয়ার ডুকাটি এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করে। এসময় প্রায় ২ কিলোমিটার ব্যাপী অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং তিতাস কর্তৃপক্ষ অবৈধ সংযোগে ব্যবহৃত রাইজার ও ২ ইঞ্চি বিতরণ পাইপ জব্দ করেন। বৃহস্পতিবারের এই অভিযানে আনুমানিক ৫ শতেরও অধিক বাসা বাড়ির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (জোবিঅ) প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েমের নেতৃত্বে এ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করন অভিযানে সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল মান্নান, সহকারী ব্যবস্থাপক সাকিব বিন আব্দুল হান্নান সহ তিতাসের কারিগরি টিমের প্রায় ৫০ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, সাভারের সব অবৈধ গ্যাস লাইন পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন করা হবে। নিয়মিত এ অভিযান মাস জুড়ে চলবে। আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা আশুলিয়ার কাঠগড়া ডুকাটি এলাকায় সকাল থেকে অভিযান চালাচ্ছি। এসময় প্রায় ২/৩ কিলোমিটার অবৈধ দুই ইঞ্চি বিতরণ লাইন পেয়ে তা বিচ্ছিন্ন করেছি। অবৈধ সংযোগ যারা দিয়েছে এবং যারা নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসময় তিনি আরও বলেন, গতকাল এই এলাকায় গ্যাস লিকেজের কারনে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তার জন্য তিতাস কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়; কারণ সংযোগটি ছিলো সম্পূর্ণ অবৈধ। এছাড়া ‘হাই-প্রেসার’ পাইপলাইন থেকে চুরি করে অবৈধভাবে এই লাইনগুলি নেয়া হয়েছে এবং কোনো ধরণের রেগুলেটর ও ব্যবহার করা হয়নাই ওই বাড়িগুলিতে। এছাড়া এসব সংযোগে ব্যবহৃত গ্যাস পাইপগুলি নিম্নমানের, মরিচা ধরা, সঠিকভাবে ‘ওয়েল্ডিং (ঝালাই) করা হয় না। এতে ‘টেপ মাস্কিং’ করার কাজটিও যেনতেন ভাবে করা হয়। এজন্য এই অবৈধ সংযোগগুলি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

গতকাল বুধবার (৩ জুলাই) এই ডুকাটি এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেয়া একটি বাসা বাড়িতে সৃষ্ট বিস্ফোরণের ফলে এক শিশুর নিহত হবার বিষয়টি উল্লেখ করে গণমাধ্যমের দ্বারা সাধারণ জনগণকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেয়া থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। এসময় তিনি উল্লেখ করেন, এইসব ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় চোরা পথে অবৈধভাবে ‘হাই-প্রেসার’ লাইন থেকে সংযোগ নেবার ফলে যেকোনো সময় মারাত্বক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর এসব লাইনে সংযোগ প্রদানকারীদের এই ব্যাপারে সেরকম কারিগরী জ্ঞান না থাকায় এই কাজ ঝুঁকিপূর্ণ। একবার কোনো একটি বাড়িতে গ্যাসের বিস্ফোরণ কিংবা লিকেজ থেকে আগুন লাগলে মুহুর্তে তা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। এজন্য জনগণেরই উচিত এই অবৈধ সংযোগ না নেওয়া।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে একাধিকবার এই ডুকাটি এলাকার অবৈধ সকল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং কয়েকটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। শুধু
তাই নয় এলাকাবাসিকেও এব্যাপারে সচেতন হওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে। বাড়ির মালিকেরা যদি সচেতন হয়ে লাইন বিচ্ছিন্ন করার পরে আবারও সংযোগ না নিতো তাহলে গতকালের বিস্ফোরণে করুণ প্রানহানির ঘটনা ঘটত না।

অভিযান চলাকালে এই এলাকায় যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আশুলিয়া থানার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছিলো।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর